বাংলা সাহিত্যে মহাকবি মধুসূদন দত্তের জীবন, মহাকাব্য,নাটক, কাব্যগ্রন্থ,কবিতা, সনেট

মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩)

https://chakrirporasuna.blogspot.com/2021/08/%20%20%20%20%20%20%20%20%20.html



জন্ম :  

২৫শে জানুয়ারি ১৮২৪

মৃত্যু : 

২৯শে জুন ১৮৭৩ 

জন্মস্থান : 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি

সাগরদাড়ি, কেশবপুর, যশাের 

পিতা : 

রাজনারায়ণ দত্ত 

মাতা: 

জাহ্নবী দেবী।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের অবদান:

বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা 

মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনী


১৮৪৩ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি তিনি ওল্ড মিশন চার্চে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। তখন তার বয়স মাত্র ১৯ বছর। ১৮৪৮ সালে মাদ্রাজে 'মেল অরফ্যান অ্যাসাইলাস'- এ ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে চাকরি লাভ করেন। 

১৮৬২ সালে তিনি ব্যারিষ্টারি পড়ার জন্য বিলেতে যান। ১৮৬৭ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। 

১৮৭৩ সালের ২৯ জুন বিকাল ২টায় কলকাতার আলিপুর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ৩০ জুন কলকাতার লেয়ার সার্কুলার রােডে খ্রিস্টীয় রীতি অনুযায়ী সমাধিস্থ করা হয়। 

বাংলা সাহিত্যের অমিত্রাক্ষর ছন্দের রূপকার। বাংলা ভাষায় অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত 

প্রথম কাব্যগ্রন্থ- তিলােত্তমাসম্ভব কাব্য (১৮৬০)। তিনি পদ্মাবতী নাটকে প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রয়ােগ করেন।


মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাট্যকার। তার রচিত ও প্রকাশিত প্রথম বাংলা গ্রন্থ শর্মিষ্ঠা (১৮৫৯) নাটক। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাটক। 

মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর প্রথম মহাকাব্য:

তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকবি। বাংলা সাহিত্যের সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য মেঘনাদবধ (১৮৬১)। 

মাইকেল মধুসূদন দত্ত সনেট

তিনি বাংলা সনেটের প্রবর্তনকারী। মাইকেল মধুসূদন রচিত চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৮৬৬) ১০২টি সনেটের সংকলন এবং প্রথম সনেট বঙ্গভাষা।

তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রহসন রচয়িতা। বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রহসন বুড়াে শালিকের ঘাড়ে রেঁ (১৮৬০)। বাংলা সাহিত্যের মহাকবি। 

তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি কারণ সাহিত্যিক ও সামাজিক বিদ্রোহ তিনিই প্রথম করেন। 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্র কাব্য 

বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্র কাব্যকার। তাঁর বীরাঙ্গনা (১৮৬২) কাব্য বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্র কাব্য।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত-কে আধুনিক বাংলা কবিতার জনক বলা হয়। 

মাইকেল মধুসূদন রচিত ও প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ - ইংরেজিতে লেখা- The captive lady (1849) ও ২য়  - Vision of the past. 

তিনি প্রথম সার্থক ট্র্যাজেডির রচয়িতা। তাঁর রচিত নাটক কৃষ্ণকুমারী (১৮৬১) বাংলা সাহিত্যের প্রথম ট্র্যাজেডি সার্থক ট্র্যাজেডি। প্রথম ঐতিহাসিক নাটক। এটি কবির শ্রেষ্ঠ নাটক। 

তিনি সার্থক কমেডি রচয়িতা। তাঁর রচিত নাটক পদ্মাবতী (১৮৬০) বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক কমেডি। 

নাটক : 

শর্মিষ্ঠা (১৮৫৯) : 

প্রথম সার্থক নাটক। কলকাতার পাইকপাড়ার রাজাদের অনুপ্রেরণায় বেলগাছিয়া থিয়েটারের জন্য মধুসূদন ১৮৫৮ সালে নাটকটি রচনা করেন এবং ৩রা সেপ্টেম্বর ১৮৫৯ সালে মঞ্চস্থ করা হয় ।

পদ্মাবতী (১৮৬০) : 

বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক কমেডি। গ্রিক পুরাণের প্রসিদ্ধ গল্প 'Apple of Discord' অবলম্বনে তিনি হিন্দু পুরাণের ছাঁচে ধর্ম সংস্কারনুযায়ী পদ্মাবতী নাটক রচনা করেন। তিনি এই নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কে প্রথম 'অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। 

কৃষ্ণকুমারী (১৮৬১) : 

এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্র্যাজেডি (৩৫তম বিসিএস)। এ নাটকের কাহিনী উইলিয়াম টডের রাজস্থান নামক গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত করেন। এটি তাঁর রচিত সর্বশ্রেষ্ঠ নাটক। 

মায়াকানন (১৮৭৪) : 

তাঁর রচিত সর্বশেষ বিয়ােগান্তক নাটক। 

রিজিয়া (অসমাপ্ত) : 

ইসলাম বিষয়ে রচিত অসমাপ্ত নাটক।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর প্রথম মহাকাব্য:

মহাকাব্য : 

মেঘনাদবধ (১৮৬১) 

[৩৮তম বিসিএস : বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য মেঘনাদবধ কাব্য। এটি মধুসূদনের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ এবং অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত। এটি সংস্কৃত মহাকাব্য রামায়ণ হতে গৃহীত। ১৮৫৭ খ্রি: সংঘটিত সিপাহী বিপ্লবের স্বাধীনতা মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে রাবণকে নায়ক ও রামকে খলনায়ক করে বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকবি মধুসূদন রচনা করেন এই স্বাধীনতাবিলাসী কাব্য। 

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে আধুনিক কবিতার জনক বলা হয়। তিনি অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। 

বাঙলা সাহিত্যের আধুনিক কবিতার জনক 

মধুসূদন দত্ত কবিতা:

কাব্যগ্রন্থ : 

চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৮৬৬) : 

সনেট সংকলন। [২১তম বিসিএস) 

 তিলােত্তমাসম্ভব(১৮৬০) : 

বাংলা ভাষায় অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। যতীন্দ্রমাহন বাগচীকে উৎসর্গ করা হয়। 

 ব্ৰজাঙ্গনা(১৮৬১) : 

বৈষ্ণব পদাবলী অনুসরণে রচিত রাধা-কৃষ্ণ বিষয়ক গীতিকাব্য।

বীরাঙ্গনা (১৮৬২) : 

বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রকাব্য [৩১তম ও ৩৬তম বিসিএস) 

ইতালীয় কবি ওভিডের Heroides কাব্যের আদর্শানুসারে ১১টি পূর্ণ পত্রে রচিত পত্রকাব্য। এটি তার অমিত্রাক্ষর ছন্দের সর্বোত্তম নিদর্শন। এ কাব্যের কবিতাগুলােকে Dramatic monologue জাতীয় কবিতা বলা যায়। এ কাব্যটি তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে উৎসর্গ করেছিলেন। 

প্রহসন : 

একেই বলে কি বলে সভ্যতা(১৮৬০) : 

ইয়ং বেঙ্গলদের চরিত্র সংশােধনের অভিলাষে রচিত। 

সনেট : 

সনেটের মধ্যে দুটি অংশ থাকে। ১৪ ছত্র বিশিষ্ট এই কবিতার প্রথম ৮ ছত্রকে বলে অষ্টক, পরবর্তী ৬ ছয় লাইনকে বলে ষটক। সনেটের আদি ধারা ইতালিয় কবি পেত্রার্ক এবং আধুনিক ধারা শেক্সপিয়ার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত।

বুড়াে শালিকের ঘাড়ে রাঁ (১৮৬০) : 

এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রহসন। প্রথম নাম ভণ্ড শিবমন্দির।

অমিত্রাক্ষর ছন্দ : 'Blank Verse

আরও গুরুত্বপূর্ণ জীবনী দেখুন:


বিগত বছরের প্রশ্ন 

০১. দীনবন্ধু মিত্রের নীলদৰ্পণ নাটকটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন কে? 

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত। (৪০তম বিসিএস)। 

০২. কোনটি মধুসূদন দত্তের পত্র কাব্য? 

উত্তর : বীরাঙ্গনা। (৩৬তম বিসিএস) 

০৩. বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থক ট্রাজেডি নাটক উত্তর : 

কৃষ্ণকুমারী। (৩৫তম বিসিএস) 

০৪. মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচনা নয় কোনটি? 

উত্তর : বেতাল পঞ্চবিংশতি। (৩৪তম বিসিএস) 

০৫. মাইকেল মধুসূদন দত্তের বীরাঙ্গনা কাব্য কোন ধরনের কাব্য? 

উত্তর : পত্রকাব্য (৩১তম বিসিএস) 

০৬. সনেট কবিতার প্রবর্তক কে? 

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত। (২৯ তম বিসিএস, ২৫ তম বিসিএস) 

০৭. অমিত্রাক্ষর ছন্দের বৈশিষ্ট্য হল- 

উত্তর : অন্ত্যমিল নেই। (২৫তম বিসিএস)

 ০৮. সনেটের কয়টি অংশ থাকে? 

উত্তর : দুটি। (২৪তম বিসিএস) 

০৯. চতুর্দশপদী কবিতাবলী কার রচনা? 

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত। (২১তম বিসিএস)

এই ছিল বাংলা সাহিত্যে মহাকবি মধুসূদন দত্তের জীবন, মহাকাব্য,নাটক, কাব্যগ্রন্থ,কবিতা, সনেট নিয়ে আলোচনা মা বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে।




Next Post Previous Post
2 Comments
  • Unknown
    Unknown August 8, 2021 at 12:33 AM

    Everything is going well with you guys, thanks again for your help today

  • Anonymous
    Anonymous August 8, 2021 at 12:46 AM

    Very High quality article

Add Comment
comment url