বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী, উপন্যাস ও সাহিত্য কর্ম
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী, উপন্যাস ও সাহিত্য কর্ম
জন্ম মৃত্যু: ২৬শে জুন, ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার কাঠালপাড়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। ৮ এপ্রিল ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী, উপন্যাস ও সাহিত্য কর্ম |
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
→ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পেশায় ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। তিনি ছিলেন উপমহাদেশের প্রথম ম্যাজিস্ট্রেট এবং গ্রাজুয়েট ।
→ প্রথম কাব্যগ্রন্থ – ললিতা তথা মানস (১৮৫৬) - দুর্গেশনন্দিনী
→ বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস - কপালকুণ্ডলা। (২৯তম বিসিএস)
→ ইংরেজি ভাষায় রচিত প্রথম উপন্যাস - Rajmohan's 2016 wife (১৮৬৪)
→ তিনি 'বঙ্গদর্শন (১৮৭২)' পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা বিসিএস] [২৫তম করেন।
→ তাঁর রচিত প্রবন্ধ ‘সাম্য' গ্রন্থটি বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেন।
→ তিনি মুসলমান কর্তৃক ‘সাহিত্য সম্রাট’ ও হিন্দুদের কর্তৃক ‘ঋষি’ উপাধি লাভ করেন।
→ বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক উপন্যাস –কপালকুন্ডলা (১৮৬৬) - উপন্যাসটির নায়ক নবকুমার।
[৩৫তম বিসিএস]।
→ বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক বাক্য – ‘পথিক তুমি পথ
হারাইয়াছ?' - এটি বলে কপালকুণ্ডলা নবকুমারকে । [১৬তম
বিসিএস]।
→ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়।
আরো দেখুন:
আবুল মনসুর আহমেদ থেকে বিসিএস পরীক্ষায় যেসব প্রশ্ন এসেছে
উপন্যাস । বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর সাহিত্যিক জীবনের বাইশ বৎসরে মোট ১৪টি উপন্যাস রচনা করেন।
দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫), কপালকুন্ডলা (১৮৬৬), মৃণালিনী (১৮৬৯), রজনী (১৮৭৭), বিষবৃক্ষ (১৮৭৩), চন্দ্রশেখর (১৮৭৫), ইন্দিরা (১৮৭৩), যুগলাঙ্গুরীয় (১৮৭৪), রাধারাণী [৩১তম বিসিএস], দেবী (১৮৭৪), আনন্দমঠ (১৮৮২) গ্রামীণ সমাজচিত্র সীতারাম (১৮৮৭, চৌধুরাণী (১৮৮৪), লাভ করেনি) (৩৬তম বিসিএস), রাজসিংহ (১৮৮১), কৃষ্ণকান্তের উইল (১৮৭৮)।
বঙ্কিমচন্দ্র নিজে ‘রাজসিংহ' কে একমাত্র ঐতিহাসিক উপন্যাস বলে আখ্যায়িত করেছেন। বঙ্কিমের রাজসিংহ উপন্যাসের একটি উক্তি ‘কিন্তু মানুষ্য কখনও পাষাণ হয়না।'(৪০তম বিসিএস)
বিষবৃক্ষ, রজনী,কৃষ্ণকান্তের উইল বঙ্কিমচন্দ্রের সামাজিক উপন্যাস।
→ আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরাণী, সীতারাম- বঙ্কিমচন্দ্রের রাজনৈতিক ও দেশাত্মবোধক ত্রয়ী উপন্যাস।
ইন্দিরা, রাধারাণী ও যুগলাঙ্গুরীয়- বঙ্কিমচন্দ্রের সংক্ষিপ্ত আকারের উপন্যাস।
দুর্গেশনন্দিনী । বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর শেষ পর্যায়ে উড়িষ্যার অধিকার নিয়ে মোঘল ও পাঠানদের মধ্যে যে সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল তা-ই এ উপন্যাসের পটভূমি। উপন্যাসে যুদ্ধ বিগ্রহের কলকোলাহলের স্থান পরিণতির পরিচয় সূচনা, বিকাশ ও এতে প্রেমের দেওয়া হলেও দান করা হয়েছে।
চরিত্র । বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
বিমলা, আয়েশা, জগৎসিংহ ও তিলোত্তমা। দুর্গেশনন্দিনীর অর্থ 'দুর্গ প্রধানের কন্যা'।
এ উপন্যাসের প্রতিক্রিয়ায় ইসমাইল হোসেন সিরাজী ‘রায়নন্দনী' উপন্যাস লেখেন।
কপালকুন্ডলা। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
(অনেকের মতে, বঙ্কিমের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস)
এটি বঙ্কিমের দ্বিতীয় উপন্যাস। এটি কপালকুন্ডলা বঙ্কিমচন্দ্রের রোমান্স ভঙ্গিতে লেখা হয়। প্রকৃতির সৌন্দর্য ও রহস্যময়তা পরিণতি তিনটি কাহিনীর ট্র্যাজিক এই কপালকুন্ডলার চরিত্র, কারণে উপন্যাসটি বঙ্কিম চন্দ্রের অন্যতম স্মরণীয় রচনা।
চরিত্র :
কপালকুন্ডলা, নবকুমার (সপ্তগ্রামনিবাসী যুবক), কাপালিক (যোগসাধক সন্ন্যাসী), মতিবিবি।
‘পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ' কপালকুণ্ডলা নবকুমারকে (বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক ডায়লোগ)
'তুমি তাই বলিয়া আমি উত্তম অধম, হইব না কেন?’ (৩২ তম বিসিএস)
** 'প্রদীপ নিভিয়া গেল।' [৩৭তম বিসিএস] ।
মৃণালিনী । বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
তুর্কী আক্রমণের ঐতিহাসিক ত্রয়োদশ শতাব্দীর বাংলাদেশ ও পটভূমিতে রচিত। চরিত্র- হেমচন্দ্র, মৃণালিনী, মনোরমা, পশুপতি।
কৃষ্ণকান্তের (১৮৭৮) উইল । বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
বঙ্কিমচন্দ্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং সমকালে বিতর্কিত উপন্যাস। চরিত্র : রোহিনী [২৩তম, ১৬তম ও ১২তম বিসিএস], গোবিন্দলাল, [১৩তম বিসিএস] সূর্যমুখী। [মনে রাখার সূত্র- রোহিনী লাল হল] সূর্যে কৃষ্ণ (কাল)
আনন্দমঠ (১৮৮২) :
অরবিন্দু Abbey of Bliss' এবং স্ত্রী নরেশচন্দ্র সেন গুপ্ত The ‘Ananda Math’ নামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ছায়া অবলম্বনে তিনি এ উপন্যাসটি রচনা করেছেন। এই গ্রন্থের 'বন্দে মাতরমগানটি দ্বারা ইংরেজ আন্দোলনের দীক্ষা বুঝিয়েছেন। চরিত্র- কল্যাণী, ভবানন্দ, ব্রহ্মচারী। সিংহ, মহেন্দ্র দেবী চৌধুরাণী (১৮৮৪) দেবী চৌধুরাণী হচ্ছেন রংপুরের পীরগাছার মন্থনার জমিদার যিনি ঐ অঞ্চলের কৃষক বিদোহ, ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলনের নেত্রী। ইংরেজদের সাথে পরাজিত হয়ে নিহত হন। বঙ্কিম এই অঞ্চলে ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে এই ঘটনা জানতে পারেন এবং রচনা করেন যা ১৮৮৪ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত।
চরিত্র-
সাগর, ব্রজেশ্বর, প্রফুল্ল, ব্রহ্ম পড় ঠাকুরাণী।
অন্যান্য সাহিত্যকর্মের (উপন্যাস) চরিত্র
শচীন্দ্র, রজনী রজনী কুন্দনন্দিনী সূর্যমুখী, বিষবৃক্ষ নগেন্দ্রনাথ, ৩৩তম বিসিএস | শৈবলিনী, প্রতাপ, চন্দ্রশেখর চন্দ্রশেখর যুগলাঙ্গুরীয় | পুরন্দর, ধনদাস, অমলা, হিরণ্ময়ী রাধারাণী, কামাক্ষা বাবু, রাধারাণী বসন্তকুমারী সীতারাম সীতারাম রাজসিংহ জেবুন্নেসা। (এটি মূলত নায়িকা প্রধান উপন্যাস।)
প্ৰবন্ধ → বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
ব্যাঙ্গাত্মক ও সরস : লোকরহস্য, কমলাকান্তের দপ্তর, মুচিরাম গুড়ের জীবন চরিত।
কমলাকান্তের দপ্তর । বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
ব্যাঙ্গাত্মক রচনা, এটি ডিকুইনসির Confession of an Opium English Eater অবলম্বনে রচিত।
→ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সমালোচনা বিষয়ক : বিজ্ঞান রহস্য, সাম্য, বিবিধ প্রবন্ধ,
বিবিধ সমালোচনা।
সাম্য :
এই গ্রন্থভুক্ত প্রবন্ধগুলোতে সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা কামনা শোষণ অর্থনৈতিক কে হিসেবে দুঃখের কারণ কৃষকদের এবং চিহ্নিত করা হয়েছে। বঙ্কিম বাজার থেকে গ্রন্থটি প্রত্যাহার করে নিত এই গ্রন্থটি।
মনে রাখুন :
সাম্য (প্রবন্ধ) – -বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। [২৪তম বিসিএস]
☼ সাম্যবাদী (কবিতা) -
কাজী নজরুল ইসলাম। এছাড়াও, লোকরহস্য, বিবিধ সমালোচনা, বিজ্ঞান রহস্য, প্রবন্ধ জীবন চরিত্র, ধর্মতত্ত্ব, বিবিধ কৃষ্ণচরিত, ক্ষুধিরাম গুড়ের উল্লেখযোগ্য।
আরো দেখুন
https://chakrirporasuna.blogspot.com/2021/08/blog-post.html?m=1